বিএটি-র সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে গাছ লাগানোর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা

বিএটি-র সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে গাছ লাগানোর মাধ্যমে
তামাক নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ার প্রাক্কালে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোাম্পানি কর্তৃক সংসদ ভবন চত্তরে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নীতিনির্ধারক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা। রোগ ও মৃত্যু সৃষ্টিকারী এবং পরিবেশ ধ্বংসকারী তামাক কোম্পানিকে জাতীয় সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া কোনভাবে সমীচীন নয়। আজ ২৭ আগষ্ট ২০১২সকাল ১১ টায় জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকারের বরাবরে “সংসদ চত্তরে বিএটির বৃক্ষরোপন কর্মসূচী বন্ধের দাবিতে” প্রদত্ত স্মারকলিপি হস্তান্তরকালে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র প্রতিনিধিদল এই মন্তব্য করেন। উক্ত প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, একলাব’র নির্বাহী পরিচালক তরিকুল ইসলাম, তামাক বিরোধী নারী জোটের প্রতিনিধি রোকেয়া বেগম, উবিনীগ এর গবেষক মাহমুদা বেগম, নাটাব‘র প্রকল্প সমন্বয়কারী সাগুফতা সুলতানা, র‌্যাক‘র নির্বাহী পরিচালক এ টি এম শহিদুল ইসলাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন ও ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং একশন ইন ডেভেলপমেন্ট এইড‘র সমন্বয়কারী মোঃ রবিউল আলম লিটন প্রমূখ।

এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, তামাক কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে প্রভাবিত বা বাধাগ্রস্ত করতে সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচীর আড়ালে নানারকম কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তামাক কোম্পানিগুলোর এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-র আর্টিকেল ৫.৩ এ একটি বিধান যুক্ত করেছে। বাংলাদেশ এই চুক্তির প্রথম স্বাক্ষর ও অন্যতম র‌্যাটিফাইকারী দেশ।

নাটাবের প্রকল্প সমন্বয়কারী সাগুফতা সুলতানা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো নিজেরা তামাক চাষ ও উৎপাদনের জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার একর বন ধ্বংশ করে এবং কাঠ পোড়ায়। তামাক কোম্পানিগুলোর উৎপাদিত পন্য মানুষের রোগ ও মৃত্যুর কারণ। রোগ, মৃত্যু ও পরিবেশ ধ্বংশকারী এ ধরনের কোম্পানির হতে গাছ গ্রহণ কতটুকু যৌক্তিক তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।

তামাক বিরোধী নারী জোটে-র রোকেয়া বেগম, জাতীয় সংসদের গাছের প্রয়োজন হলে তা পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর বা জলবায়ু ফান্ডের সহায়তায় সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে কোনভাবে তামাক কোম্পানি মতো বির্তকিত প্রতিষ্ঠান হতে সংগ্রহ করা সমীচীন নয়।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট-র প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, জাতীয় সংসদ এ দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। এ প্রতিষ্ঠান আমাদের গর্ব, অহংকার। জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে কোন বির্তকিত প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রসার বা প্রভাব সৃষ্টির কারণে ব্যবহার করতে দেয়া সমীচীন নয়।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র প্রতিনিধিদল স্মারকলিপিতে তামাক কোম্পানির মতো রোগ, মৃত্যু ও পরিবেশ ধ্বংশ পন্য উৎপাদনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় সংসদের প্রাঙ্গন গাছ লাগানো হতে বিরত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে স্পিকারকে আহবান জানান।