শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে বিএটির অনুদান একটি লোক দেখানো কার্যক্রম

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধ না করে শ্রম আইন লঙ্ঘন করছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি। কয়েক বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে এ কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা। ঢাকা ও সাভার ফ্যাক্টরিতে বর্তমানে আন্দোলন চলছে। গত বছর কুষ্টিয়ায় বিএটি এর ফ্যাক্টরিতেও এধরনের আন্দোলন চলমান ছিলো। অথচ ২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি করে রেকর্ড পরিমান মুনাফা (২১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা) করেছে বিএটিবি। সংশ্লিষ্ট খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটির মোট মুনাফা ৯৫০ কোটি টাকা, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, বিএটি প্রতি বছর সরকারের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে অনুদান প্রদান করে থাকে। যদিও এটি করতে তারা আইনগত ভাবে বাধ্য কারন ২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুসারে এক বছরের নিট লভ্যাংশের ৫ শতাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ অর্থ নিজ কোম্পানীর শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। বাকী ১ শতাংশের অর্ধেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে এবং অবশিষ্ট অর্থ শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে জমা দিতে হয়। কিন্তু, এই বিষয়টি তারা সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে নানা ভাবে প্রচার প্রচারণা করে যা জনমনে তাদের নিয়ে ইতিবাচক ধারনার সৃষ্টি করে । মুলত এটি নীতি নির্ধারকদের বিভ্রান্ত করে তোলার একটি কৌশল।

গত কয়েকদিনের চলমান বিএটির শ্রমিক অসন্তোষ এটিই প্রমাণ করে যে এই কোম্পানিটির শ্রমিক কল্যাণ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচী পুরোপুরি ভ্রান্ত ধারনা। যে প্রতিষ্ঠান নিজের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনা তারা শ্রমিক কল্যাণ কিংবা সামাজিক দায়বদ্ধতার কাজ করে এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার এবং সমাজে ইতিবাচক অবস্থান তৈরীর জন্য কোম্পানিটি শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে অর্থ প্রদান এবং সবোর্চ্চ করদাতা হওয়ার মতো সংবাদগুলো গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করে।
আমরা বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আশা করি, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কারখানা পরিদর্শক অধিদপ্তর এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সহিত খতিয়ে দেখবে। সেই সাথে, তামাক কোম্পানির সাথে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ এর নীতি অনুসরন করবে। সর্বোপরি, জনগণ এবং গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ তারা যেন বিএটি সহ তামাক কোম্পানিগুলোর এ ধরণের প্রতারণামূলক কাজে বিভ্রান্ত না হয়।

সরকারের ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ লক্ষ্যমাত্রা: সিগারেট কোম্পানির অপতৎপরতা

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা
বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংসগঠসমূহের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানবেন।
আপনারা জানেন সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অথচ তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার এই মহৎ উদ্যোগকে ব্যহত করতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

অপচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য দেশের তরুণ সমাজকে ধূমপানের দিকে আকৃষ্ট করা। তারা আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন করার পাশাপাশি, প্রণোদনা, রেষ্টুরেন্টে ধূমপানের স্থান তৈরি, বিশ^বিদ্যালয়ে দুত নিয়োগ করছে। আমরা আপনার সন্তানকে ধূমপায়ী বানিয়ে বাণিজ্য করাই তাদের উদ্দেশ্য। দেশে ব্যবসা করা ২ টি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি এই বেআইনী কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যার বিস্তারিত আমরা নিম্নে তুলে ধরছি।

করোনা প্রাদুর্ভাবে তামাক পণ্য উৎপাদন ও কোম্পানি খোলা রাখার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবী

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবী যখন অবরুদ্ধ তখন ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানির তামাকজাত পণ্য উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয় অব্যহত রাখার অনুমতি দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। যা অত্যন্ত দু:খজনক! অবিলম্বে আত্নঘাতি এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবী জানায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।

বাংলাদেশে ৩৫% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। বলাই বাহৃল্য যে, কয়েক কোটি মানুষ করোনা ভাইরাস সংক্রমনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তার উপর এমন আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত চলমান করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। এধরনের কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” প্রত্যয় বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সবিনয় অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।

অর্থকরী ফসলের তালিকা থেকে ‘তামাক’ বাদ দেওয়ার দাবী

স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, পরিবেশ সকল ক্ষেত্রেই তামাক উন্নয়নের অন্তরায়। কৃষি বিপনন আইন, ২০১৮ তে তামাক কে অর্থকরী ফসলের তালিকায় রাখা হয়েছে। তামাক অর্থকরী ফসল হিসাবে উল্লেখ থাকায় আইন অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সরকারের সহায়তায় তামাকের ব্যাপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটবে। যা দেশে চলমান তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে। তাই অর্থকরী ফসলের তালিকা থেকে তামাক কে বাদ দেওয়ার দাবীতে ১৬ জানুয়ারী ২০২০ ধানমন্ডির আবহানী মাঠের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের যৌথ আয়োজনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে ও সবজি মিছিল থেকে বক্তারা এ দাবী করেন। বক্তারা ক্ষতিকর তামাক চাষের পরিবর্তে খাদ্য শস্য উৎপাদনে চাষীদের উৎসাহিত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

আইন লঙ্ঘণকারী চলচ্চিত্রসমূহকে জাতীয় পুরস্কার প্রদানে নিন্দা ও প্রতিবাদ

২০১৭ ও ২০১৮ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে অবদানের জন্য ২৮টি বিভাগে বিশিষ্ট শিল্পী ও কলাকূশলীকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদানের ঘোষণা করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালের সেরা ছবির পুরস্কার পাচ্ছে দীপংকর দীপন পরিচালিত ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্র। উল্ল্যেখ্য, এ চলচ্চিত্র নির্মানে তামাক কোম্পানি সহায়তা করে। এছাড়া ২০১৮ সালে চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রের জন্য জয়া আহসান (দেবী চলচ্ছিত্র) মনোনীত হয়েছেন। জয়া আহসান একজন স্বনামধন্য, গুণী অভিনেত্রী হলেও যে চলচ্চিত্রটির (দেবী) জন্য মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে সেটিও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণের দায়ে নানাভাবে বির্তকিত ও সমালোচিত।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাংলাদেশে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। তামাক কোম্পানির প্রণোদনাপ্রাপ্ত এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণকারী চলচিত্রগুলোকে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করা হলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়ন বাধাপ্রাপ্ত হবে। এ ধরনের দৃষ্টান্ত অন্যদেরকেও আইন লঙ্ঘণে উৎসাহী করে তুলবে। সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী এমন দুটি চলচ্চিত্র ও কলাকূশলীদেরকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীত করায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। সেই সাথে আগামী দিনে এ ধরনের চলচ্চিত্রগুলোকে পুরস্কার প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।

Lorem Ispum Dummy

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit. Quidem accusamus nostrum ratione delectus quam modi iste minima velit, autem, expedita sit iusto atque quia dolorem praesentium ea sunt obcaecati magnam.