জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস ২০১৭: তামাক বিরোধী সম্মাননায় ভূষিত জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার (অব:) আব্দুল মালিক
তামাক বিরোধী সম্মাননা গ্রহণ করছেন জাতীয় অধ্যাপক বব্রিগ্রেডিয়ার (অব:) আব্দুল মালিক।
তামাক বিরোধী সম্মাননা গ্রহণ করছেন জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগ্রেডিয়ার (অব:) আব্দুল মালিক।

২০০০ সাল থেকেই ৯ অক্টোবর ব্যাপকভাবে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তামাক বিরোধী কার্যক্রমে অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ২০১১ সাল থেকে ৯ অক্টোবরকে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস হিসাবে ঘোষণা করার দাবী জানিয়ে বেসরকারীভাবে সারাদেশে “জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস” পালন করে আসছে। এ বছর জাতীয় তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারন করা হয়েছে ‘সারচার্জের অর্থে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক’।

 
৭ অক্টোবর ২০১৭ বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট জাতীয় প্রেসক্লাব’র সেমিনার কক্ষে “জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন ও সম্মাননা প্রদান” অনুষ্ঠান আয়োজন করে। দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখার জন্য জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব:) আব্দুল মালিক প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ কে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
 
সভায় সম্মানিত প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, উপদেষ্টা বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, সভাপতিত্ব করেন সাইফুদ্দিন আহমেদ সমন্বয়কারী বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, সম্মানিত অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন মোসা. নাছিমা বেগম, অতিরিক্ত সচিব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম কারিগরি উপদেষ্টা দ্যা ইউনিয়ন। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হেলাল আহমেদ, সেক্রেটারী জেনারেল, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, আমিনুল ইসলাম বকুল, এইড ফাউন্ডেশন।
 
অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, অকাল মৃত্যু ও অসুস্থ্যতা হ্রাস এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করেছে নানা ধরনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত সকল তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় মূল্যের উপর ১% হারে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচাজর্’ আরোপ করেছে। এ অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতেই সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি অনুমোদন ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী।
 
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, তামাক কোম্পানি ও তাদের সুবিধাভোগীদের হস্তক্ষেপ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণকে সুরক্ষিত রাখা। তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার পথে প্রধান অন্তরায়। তাই আমরা অবিলম্বে তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার ও তামাক কোম্পানিতে সরকারের প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।
 
নাছিমা বেগম বলেন, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে বাংলাদেশে সাধিত হয়েছে অনেক ইতিবাচক অগ্রগতি। তামাকজাত দ্রব্যের উপর করহার কম হলেও আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর আরোপ করার পদক্ষেপ বৈশ্বিক পরিমন্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক পদক্ষেপই বিশ্বে অনুকরণীয়। স্বাস্থ্যকর হিসাবে গৃহিত অর্থের সঠিক ব্যবহারের পদক্ষেপ বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আরো সুসংহত করবে।
 
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাকের ভয়াবহ প্রভাব হতে মুক্ত রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার, গণমাধ্যম, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্বেও তামাক নিয়ন্ত্রণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গিকার বাস্তবায়নে “জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং সহায়ক অন্যান্য নীতি প্রণয়ন” তরান্বিত তরা অত্যন্ত জরুরি।