News
তামাকের কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়া কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখার দাবী
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কয়েকগুণ বাড়লেও তামাকজাত পণ্যের মূল্য আশানুরুপ বাড়েনি। তামাকপণ্যের মূল্য না বাড়ার জন্য অন্যতম প্রধান কারন তামাক কোম্পানিগুলোর অপকৌশল তথা কর নীতিতে প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা। কূট-কৌশলী তামাক কোম্পানিগুলোর এ ধরনের অপচেষ্টা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং বাংলাদেশের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে অন্তরায়।
২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, সকাল ১১:০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র উদ্যোগে “কর নীতিতে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহত করা হোক” শীর্ষক একটি অবস্থান কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা। এসময় তারা তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও করবৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্ল্যাব/স্তর প্রথা বিলুপ্তিরও দাবী জানান। কর্মসূচি শেষে জাতীয় রাজস্ব ভবনে চেয়ারম্যান বরাবর তামাকের শক্তিশালী শুল্কনীতি গ্রহণ এবং আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি এবং উচ্চহারে কর বৃদ্ধির দাবী জানিয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
‘প্রত্যাশা’ মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বস্তি উন্নয়ন ও কর্মসহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হাসিনুর রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, ইপসার প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাজমুল হায়দার, মডার্ণ ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত, তামাক বিরোধী নারী জোট’র সদস্য রোকেয়া বেগম, প্রিমেস্ড এর নির্বাহী পরিচালক মো. আল মাসুদ, পিএসএস সংস্থার নির্বাহী পরিচালক কে.এম রকিবুল ইসলাম রিপন, পিডিএস এর সদস্য মো. নাজমুল আলম অনিক। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার।
হেলাল আহমেদ বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়াতে যেন তামাক কোম্পানি কোনরুপ হস্তক্ষেপ না করতে পারে এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আরো সচেতন হতে হবে। কেননা, জনস্বাস্থ্য সবার উপরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়তে হলে তামাকের উপর উচ্চহারে করারোপ একটি কার্যকর পদ্ধতি।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে কম মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য বাংলাদেশেই পাওয়া যায়। এজন্য বর্তমানে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটির বেশি। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা বাবদ সরকারকে প্রতিবছর ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয় যা তামাকজাত দ্রব্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের দ্বিগুণ।
হাসিনুর রহমান বলেন, স্বল্পমূল্যে সাদাপাতা, জর্দা, গুল, বিড়ি ও সিগারেট সহজলভ্য হওয়ায় বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের মধ্যে তামাক সেবনের হার ক্রমবর্ধমান। এজন্য খোলা ও খুচরা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে হবে। এজন্য শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণ ও উচ্চহারে কর আরোপ জরুরী যাতে তামাকজাত পণ্যের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায়।
মো: নাজমুল হায়দার বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বাড়ালে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যু কমে আসবে। যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের ব্যয় কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে। দেখা গেছে যে, তামাকের মূল্য বৃদ্ধিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশসমূহে ধূমপায়ী এবং ধূমপানজনিত মৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য নাজিমুদ্দিন, আইএসডিএসএম এর কর্মকর্তা রাজলক্ষী চৌধুরী, টিসিআরসি’র প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন, এইড ফাউন্ডেশনের এডভোকেসী কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম, সাস এর কর্মকর্তা সাজেদা বেগম, সুখ সাথী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক তুহিন মাহমুদ, হিল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জেবুন্নেসা, হিমু পরিবহনের আহসান হাবীব মুরাদ, মানবাধীকার কর্মী মো. মাসুম প্রমূখ।