News
তামাক কোম্পানির আগ্রাসন প্রতিহত না করতে পারলে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। গণমাধ্যম ও মিডিয়ায় তামাক বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ, যথাযথ প্রয়োগ এবং তামাক কোম্পানির অপকৌশল প্রতিহত করতে দ্রুত কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের আয়োজনে (৯ অক্টোবর, ২০২১) বেলা সাড়ে ১১:০০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে “জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি, তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহত করি” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি’র সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান ও জোটের উপদেষ্টা আবু নাসের খান, ঢাকা বিশ^ বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ‘প্রত্যাশা’ মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ ও ডাস এর উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল। অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল এর সঞ্চানায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।
প্রবন্ধে মিঠুন বৈদ্য তামাক পণ্যের কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় কোম্পানির কূটকৌশল, তামাক নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিতে কোম্পানির অযাচিত হস্তক্ষেপ প্রতিহত এবং তামাকের কর ব্যবস্থা আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং তামাক কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে গাইডলাইন ও কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়নের সুপারিশ করেন। এছাড়াও তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরেন।
মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে আর মাত্র ১৯ বছর বাকি রয়েছে। সুতরাং অনতিবিলম্বে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো থেকে শেয়ার প্রত্যাহার ও সরকারী কর্মকর্তাদেরকে বিএটিবি’র বোর্ড অব ডিরেক্টরি থেকে সরিয়ে নিতে হবে। তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নীতিমালা চূড়ান্ত করা জরুরী।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৯৯ সালে বিএটি’র ‘ভয়েস অব ডিসকভারী’ প্রতিহত করার মাধ্যমে জোটের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘ যাত্রায় আমাদের অনেক সফলতা এসেছে যেমন: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের মাধ্যমে কোম্পানির আগ্রাসী বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ, অধূমপায়ীর অধিকার সুরক্ষা, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর প্রচলন, তামাক পণ্য থেকে সারচার্জ আরোপ, রাজনৈতিক অঙ্গীকার অন্যতম। তামাক কোম্পানিতে শেয়ার ও পরিচালনা পর্ষদে সরকারের প্রতিনিধিত্ব প্রত্যাহারে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রকল্প কর্মকর্তা অদূত রহমান ইমন, আইডাব্লিউবি’র পলিসি অফিসার আ.ন.ম মাসুম বিল্লাহ ভুইয়া, নাটাব এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ, লিও ক্লাব ওয়েসিস এর ট্রেজারার নেসার আহমেদ সজীব, সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন, জালাল উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতি, আইডিএফ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এর প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।