তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবী

তরুণ প্রজন্মের সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ, আইন বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পাবলিক প্লেস, পরিবহণের পরিধি বৃদ্ধি এবং কোম্পানীর প্রভাব থেকে আইন ও নীতি সুরক্ষাসহ সুনির্দিষ্ট দাবীতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। ১৮ অক্টোবর, ২০২০ বেলা ১১টায় “ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ সংশোধন” বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় উক্ত দাবী জানান তামাক বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির আড়ালে তামাক পণ্যের ব্রান্ড প্রমোশনের মাধ্যমে তরুণদেরকে ধূমপানে আকৃষ্ট, এবং নীতিপ্রণেতাদের প্রভাবিত করে ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। সামাজিক বনায়ন বা বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি, বিশুদ্ধ পানি সরবারহ তাদের কৌশল মাত্র। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে কূট-কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমেই এসব কর্মকান্ড পরিচালনা করছে তামাক কোম্পানিগুলো।

বক্তারা আরো বলেন, তামাক চাষ পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি করছে। এসডিজি অর্জনেও অন্যতম প্রতিবন্ধকতা ‘তামাক’। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক চাষ নীতিমালা দ্রততম সময়ে চূড়ান্ত করা জরুরী। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিসমূহ তামাক কোম্পানির আগ্রাসন থেকে সুরক্ষিত করতে হবে যাতে এর বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত না হয়।

এছাড়াও বক্তারা তামাক পণ্যের খুচরা বিক্রি ও বিক্রয়স্থলে খালি প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধের পাশাপাশি সকল তামাকজাত পণ্যের ‘স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর পরিমাণ বৃদ্ধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে-পাশে তামাক পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ এবং তামাক বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবী জানান। সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণের ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমান বৃদ্ধি ও জেল দেওয়া, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটিকে সংশোধনের মাধ্যমে আরো অধিক শক্তিশালী করে তোলার বিষয়েও মতামত ব্যক্ত করা হয়।

আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সভায় বক্তব্য রাখেন কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড-খুলনার উপপরিচালক মু: বিল্লাল হোসেন খান, স্কোপ-বরিশাল এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল এ্যাকশন-ইপসা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প প্রধান নাসিম বানু শ্যামলী, ডাস্ বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক আমিরুল ইসলাম লিন্টু, ডিডিপি-সিরাজগঞ্জ এর নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা, সিডাস-গাজীপুর এর নির্বাহী পরিচালক হাসান ইউসুফ, অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো-ঢা.বি এর তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, টিসিআরসি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা প্রমূখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান। দেশের বিভিন্ন জেলা হতে অনলাইনে জোট’র বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় যোগ দেন।