News
তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধের বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে
দেশের সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা, সর্বোপরি ২০৪০ সালের মধ্যে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে উল্লেখিত সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধের বিধান বাস্তবায়ন করা জরুরী। ১৬ জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত সভাকক্ষে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে “তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞাপন বন্ধে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় সরকারের সংশশ্লষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি বক্তারা এ আহব্বান জানান।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল ৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম অজিয়র রহমান। সন্মানিত অতিথি হিসেবে আারো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রোজলিন শহীদ চৌধুরী, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম। সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।
গাউস পিয়ারী বলেন, তরুণ প্রজন্মকে তামাকে আসক্ত করতে নানাধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তাদের মুনাফার বলি হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণরা। পাশাপাশি তামাক ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিতে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক কোম্পানির এ সকল কার্যক্রম বন্ধ করা জরুরী।
অজিয়র রহমান বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। আইনটি বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থাগুলোকে তামাক নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম গতিশীলকরণে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমাদের অর্জন আরো বাড়বে। এক্ষেত্রে জাতীয় এবং মাঠ পর্যায়ে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, যে কোন বিষয়ে সুনিদিষ্ট একটি লক্ষ্য নির্ধারিত থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা অব্যহত রাখলেও তামাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘণ করে জনগণকে তামাকজাত দ্রব্য সেবনে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন পরির্দশনে দেখা গেছে তামাক কোম্পানিগুলো নানা কৌশলে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত রেখেছে। যা দেশের আইনের প্রতি চরম অবমাননাকর ও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন। সকল তামাক কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরী।
উন্মুক্ত আলোচনা অংশ নেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. বজলুর রহমান, হলি টাইম পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল কান্তি নাগ, সুপ্র এর প্রকল্প সমন্বয়ক মো. আজমল হোসেন, নাটাব এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক একেএম খলিল উল্লাহ প্রমূখ।
সভায় তামাক বিরোধী নারী জোট, এইড ফাউন্ডেশন, কারিতাস, একলাব, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, বাংলাদেশ গার্ল গাইডস্ এসোসিয়েশন, বিসিএইচআরডি, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতি, মানবাধীকার সংস্থা, হিমু পরিবহন, হীল, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, ঢাকা পল্লী সেবা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।