News
সকল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে উপাদান, উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ প্রদানের বিধান বাস্তবায়ন করার দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট । ২১ জানুয়ারী, সকাল সাড়ে দশটায় সকল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে উপাদান, উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ প্রদানের বিধান বাস্তবায়নের দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও জোটভুক্ত সংগঠন।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আবির হাসান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মসুচি ব্যাবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডি.এম সাকলায়েন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্স সেলের প্রকল্প কর্মকর্তা ফারহানা জামান লিজা, মানবিক এর তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সুমন শেখ, মানবাধিকার সংস্থার নির্বাহী পরিচালক, ডা. মো. আনোয়ার হোসেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার, স্বদেশ মৃত্তিকার মহাসচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন দিপু প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প কর্মকর্তা তৌহিদ-উদ-দৌলা রেজা।
বক্তারা বলেন, তামাক ব্যবহার বিশ্বে রোগ ও অপমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চিহিৃত হয়ে আসছে। তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিগত দিনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন এবং সংশোধনসহ বেশ কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যে কোন পণ্য ক্রয় করার সময় পণ্যের উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং বিদ্যমান উপাদানের (ক্ষতিকর ও উপকারী) নাম জানাটা ভোক্তার জন্য অত্যন্ত জরুরী। যে কোন পণ্যের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য এবং এটি ব্যবসার নৈতিক ও আইনগত ভিত্তি। দেশের সকল আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। কিন্তু মৃত্যুর ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ভোক্তাদের (ধূমপায়ী ও তামাক সেবী) সঙ্গে এ বিষয়ে প্রতারণা করে আসছে।
বক্তার আরো বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো বিড়ি, সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করে না। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এই পণ্যটি কখনোই আজীবন মেয়াদের ব্যবহার উপযোগী হতে পারে না। নিশ্চয়ই তা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ অন্তর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রের জনগণের অধিকার সংরক্ষনে ২০০৯ সালে ”ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন” পাশ করেছে। এ আইনের ৩৭ ধারায় বলা হয়েছে, “কোন ব্যক্তি কোন আইন বা বিধি দ্বারা কোন পণ্য মোড়কাবদ্ধভাবে বিক্রয় করিবার এবং মোড়কের গায়ে সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উৎপাদন, ব্যবহার-বিধি, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেটজাতকরণের তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করিবার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘণ করিয়া থাকিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।”
স্বাস্থ্যের উপর তামাকজাত পন্য ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী প্রমাণিত। তামাকজাত দ্রব্য স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর । এটি ভোক্তার স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বহুলাংশে বৃদ্ধি করতে পারে। একজন তামাকজাত পণ্য ব্যবহারকারী ভোক্তার জানার অধিকার রয়েছে তার ক্রয়কৃত পণ্যে কি কি উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে, কবে উৎপাদন ও প্যাকেটজাতকরণ করা হয়েছে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ। জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, ক্ষতিকর উপাদান সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত দৃষ্টান্তমূলক ”ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯” এর সঠিক ও কার্যকর বাস্তবায়নে বিড়ি সিগারেটসহ সকল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে উৎপাদন, প্যাকেটজাতকরণ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্টভাবে প্রদাণ করা জরুরী। জনস্বার্থে অবিলম্বে সকল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে উপাদান, উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ প্রদানের বিধান বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক করা হোক।