News
বাংলাদেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি তামাক কোম্পানিকে কোনোপ্রকার সহযোগিতা না করার নীতি গ্রহণ করেছে। আজ ১১ অক্টোবর ২০২৩, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও স্টামফোর্ড এন্টি ড্রাগ ফোরামের সম্মিলিতভাবে একটি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে। উক্ত কর্মসূচীতে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এফসিটিসি-৫.৩ আর্টিকেলকে সমর্থন জানিয়ে “কোড অব কনডাক্ট” স্বাক্ষর করে।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড: মনিরুজ্জামান। স্টামফোর্ড এন্টি ড্রাগ ফোরামের সদস্য নুসরাত জাহান টুম্পার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব।
মূল প্রবন্ধে, কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নে কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং উত্তরণে কি ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের আমিনুল ইসলাম বকুল, আন্তর্জাতিক সংস্থা স্টপ এর ফোকাল পয়েন্ট ফাহমিদা ইসলাম এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসির বিভাগের অধ্যাপক মো. আল মামুন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইতি লায়লা কাজী, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের উপদেষ্টা রেহানা আক্তার, ডাস এর গ্রোগ্রাম অফিসার রবিউল ইসলাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা আজিম খান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।
সভাপতি বলেন, তামাক কোম্পানির মুখোশ উন্মোচনের উদ্দেশ্য নিয়ে আজকের আয়োজিত অনুষ্ঠানের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। তিনি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানকে কোড অব কন্ডাক্ট গ্রহণের আহবান জানান। এ বিষয়ে যথাসম্ভব সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো নিজেদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টির জন্য তামাকজাত দ্রব্যের প্রচার প্রচারণায় বিপুল অর্থ ব্যয় করে। তিনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হলে তামাক চাষের পরিবর্তে খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯% তরুণ। তামাক কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদী ভোক্তা তৈরী করার লক্ষ্যে তারা মূলত তরুণদের টার্গেট করে।এছাড়া, ই – সিগারেটকে কম ক্ষতিকর হিসেবে প্রচারের পাশপাশি কোম্পানিগুলো নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে স্মোকিং জোন তৈরি করে দিচ্ছে।
পরিশেষে বক্তারা বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির আজকের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নো-স্মোকিং সাইনেজ স্থাপন এবং ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্রগুলো অপসারনের দাবি জানান।
৫.৩ অনুসারে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে:
· তামাক কোম্পানির সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির নামে প্রচারণা বন্ধ
· সর্বস্তরের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি
· প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানি বা কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা গ্রহণ, প্রদান ও অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবে।
· সকল কার্যালয়ে সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকবে।
· অন্যান্য সংস্থাসমূহকে এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে উদ্ধুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে।
· তামাক কোম্পানির স্বার্থে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সুবিধা পেয়েছেন, এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেবে না।