জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকজাত পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা বিশ্বব্যাপি প্রশংসিত। কিন্তু, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের এমন ঈর্ষণীয় অগ্রগতির পাশাপাশি কয়েকটি অসঙ্গতি তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের অঙ্গীকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। যেমন: প্রাণঘাতী তামাকজাত পণ্য ব্যবসায়ী ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) কোম্পানিতে সরকার ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১১.৪৫ শতাংশ শেয়ার এবং এ কোম্পনির পরিচালনা পর্ষদে (বোর্ড অফ ডিরেক্টরস্) সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চারজন সচিব প্রতিনিধিত্ব করছেন। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যক্রমকে ধূর্ত তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে ও নৈতিকতার স্বার্থে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার ও পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরকারি প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার করা উচিৎ।
২৩ নভেম্বর, ২০১৬ সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ হতে সরকারী কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবীতে” আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে উপরোক্ত দাবী জানানো হয়। প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, মাদক ও নেশা বিরোধী কাউন্সিল (মানবিক) এর তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সুমন শেখ, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এর সহকারী গবেষক মো. মহিউদ্দিন প্রমূখ। এতে সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান।
হেলাল আহমেদ বলেন, চতুর তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে প্রভাব বিস্তার এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করে থাকে। বিএটির মত প্রাণঘাতি তামাক কোম্পানিতে সরকারি প্রতিনিধি থাকায় তামাক কোম্পানিগুলো দেশের আইন লঙ্ঘণ করে চলেছে। তামাক কোম্পানির এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিহত করতে সরকারকে অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে আর্ন্তজাতিক চুক্তি এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুযায়ী তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্য সর্ম্পকিত সকল নীতিকে তামাক কোম্পানীর প্রভাবমুক্ত রাখা সরকার ও প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তামাক নিয়ন্ত্রনের স্বার্থেই সরকারের কোনো প্রতিনিধির সিগারেট কোম্পানির পরিচালক পদে থাকা কিংবা ক্ষতিকর তামাকজাত পণ্য হতে লভ্যাংশ গ্রহণ সমীচীন নয়।
আনোয়ার হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত ঘোষনার যে দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন তা বাস্তবায়ন করতে হলে বিএটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরকারী কর্মকর্তা এবং বিএটিতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার প্রত্যাহার করা জরুরী।