সারাবিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে কোম্পানীগুলো নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে বিধায় আর্ন্তজাতিক চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ তে তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন ছাড়া তামাক কোম্পানীগুলোর সাথে সকল যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন ও এর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। ১৮ জানুয়ারি, দুপুর ১.৩০ মিনিটে তামাক বিরোধী জোট এর একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর মাননীয় মেয়র সাঈদ খোকনের সাথে নগর ভবনে স্বাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ জানিয়ে মেয়রের হাতে একটি স্মারকলিপিটি প্রদাণ করেন।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তি, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমান, মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি মোঃ আনোয়ার হোসেন টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের গবেষনা সহকারী মহিউদ্দিন রাসেল, মানবিক এর তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সুমন শেখ, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে। এসময় মেয়রের একান্ত সচিব কবীর মাহমুদ এবং প্রটোকল অফিসার হাবীবুল আলম সুমন উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকার আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নেও গ্রহণ করছে বিভিন্ন উদ্যোগ ফলে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি প্রতিনিধিদলের বক্তব্য শোনেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে জোরালো করার পরামর্শ প্রদাণ করেন। তামাক বিরোধী জোট এর প্রতিনিধিদল যে সকল বিষয় উত্থাপন করেন জনস্বার্থে তিনি এসব বিষয় বিবেচনায় নেবেন বলে জানান।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, এসডিজির ৩ নম্বর লক্ষ্য অর্জন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় সফল করতে তামাক নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তামাক কোম্পানীর অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা প্রতিহত করার প্রতি জোর দেওয়া জরুরী । তামাক কোম্পানীগুলো নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী আয়োজন এবং এসকল কর্মসূচীতে নীতি নির্ধারকদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে থাকে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো আয়োজিত “ব্যাটল অব মাইন্ড’স” এধরনের একটি কর্মসূচী। বিএটি এ কর্মসূচীর নামে রোডশো, ভ্রমন, বিনোদনসহ অনুষ্ঠানের প্রচার-প্রচারণা কর্মসূচীর মাধ্যমে তরুণদের তামাকে নেশায় ধাবিত করছে। এসকল প্রতারনামূলক কর্মসূচী থেকে সরকারী প্রতিষ্ঠান, নীতি নির্ধারকদের বর্জন করা উচিৎ। উল্লেখ্য, বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর ৫(গ) ধারায় তামাক কোম্পানির নাম, সাইন, ট্রেডমার্ক, প্রতীক ব্যবহার করে এ ধরনের কোন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন ও পুরষ্কার প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি এই ধারা লঙ্ঘণ করলে অনধিক একলক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা উভয়দন্ডের বিধান বলবৎ আছে। আইনকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ব্যান্ড প্রমোশনের আড়ালে মৃত্যুবিপননকারী তামাক কোম্পানীটির এ কর্মসূচিটি পরিচালনা করে চলেছে।