News
বিড়ি-সিগারেট, ই-সিগারেট বা যে কোন ধরনের তামাকপণ্য সেবনে অভ্যস্তদের জন্য নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন যে, ধূমপায়ী/তামাক সেবনকারীরা নানারকম স্বাস্থ্য সমস্যাসহ জটিল ও কঠিন রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে বিধায় COVID-19 বা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির ঝুঁকিতে শীর্ষে অবস্থান করছে।
কারণ হিসেবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সিগারেট সেবনের হাতের আঙুলগুলো ঠোঁটের সংস্পর্শে আসে এবং এর ফলে হাতে (বা সিগারেটের ফিল্টারে) লেগে থাকা ভাইরাস মুখে চলে যাবার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এছাড়া ধূমপায়ীদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যায় ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি – যা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তদুপরি, ধূমপান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস করে বিধায়, সহজেই ক্ষতিকর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এমনকি অকালমৃত্যুও হতে থাকে।
লং আইল্যান্ডে নিউইয়র্ক উইনথ্রপ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক পালমোনলজি বিভাগের প্রধান মেলোদি পিরজাদা বলেন, বহু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপান ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে দেয়। যারা ধূমপান করেন অথবা ভ্যাপর নেন তাদের জন্য করোনাভাইরাস জটিলতা বাড়াতে পারে। এটা একটা সাধারণ জ্ঞানের বিষয়। যাদের ধূমপান বা ভ্যাপিংয়ের অভ্যাস আছে তাদের পুরো শ্বাসতন্ত্র এবং ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ সব কিছুই বদলে যায়।
চ্যাপেল হিলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনার কোষ জীববিজ্ঞান ও শারীরবিদ্যার অধ্যাপক রবার্ট ট্যারান বলেন, ধূমপানকে ইনফ্লুয়েঞ্জার একটি রিস্ক ফ্যাক্টর বিবেচনা করা হয়। ধূমপায়ীদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়। এতে শ্বাসতন্ত্রে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হয়। কিন্তু, ফুসফুস পরিষ্কার হয় না। এছাড়া ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়, রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোতে পরিবর্তন আসে। এতে যে প্রভাব পড়ে তাতে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং সংক্রমিত হলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
স্যান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্টার ফর টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনের পরিচালক সান্তোস গ্লানৎজ বলেন, এখনই ধূমপান ও ভ্যাপিং বন্ধ করতে সচেতনতা দরকার। ধূমপানের ক্ষতির ব্যাপারে সবাই কম বেশি জানি। চীনের গবেষণায় কভিড-১৯ ও ধূমপানের মধ্যকার যে সম্পর্ক জানা গেছে, ঝুঁকি কমাতে গবেষণাটি সবার বিবেচনা করা উচিত।