বর্ণাঢ্য র‌্যালি, অবস্থান কর্মসূচীর মাধ্যমে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস পালন

বর্ণাঢ্য র‌্যালি, অবস্থান কর্মসূচীর মাধ্যমে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস পালন
অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি

জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রায় অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে বর্ণাঢ্য স্কেটিং রালি, অবস্থান কর্মসূচীর মাধ্যমে পালিত হলো জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস। ০৯ অক্টোবর ২০১১ সকাল ১১.৩০টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত র‌্যালীটি জাতীয় জাদুঘরে সম্মুখ হতে শুরু হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে জাতীয় প্রেসকাবে শেষ হয়। র‌্যালিতে স্কেটরা আইনে সকল তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপণ নিষিদ্ধ, শতভাগ ধূমপানমুক্ত স্থান নিশ্চিত, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান, তামাক চাষ নিষিদ্ধকরণের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ফেষ্টুন ও প্লেকার্ড বহন করে।

র‌্যালীর পূর্বে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর এর সামনে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, একলাব এর নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম, জাতীয় অধূমপায়ী ফোরাম এর সহ-সভাপতি এএম মাহিদুল ইসলাম দাদাভাই, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ইপসা’র কর্মসূচী কর্মকর্তা নাজমূল হায়দার, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা।

বক্তারা বলেন, বিদ্যমান আইনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে আইনটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তামাক কোম্পানিগুলো আইনের এ দুর্বলতার সুযোগে দেশের তরুন সমাজকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করতে নানা ধরনের প্রচারণা করছে। কোম্পানিগুলোর এ কার্যক্রম জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের প্রচেষ্টাকে ব্যহত করছে। প্রতিবছর তামাকের কারণে মারা যাওয়া ৫৭,০০০ মানুষের জীবন বাচাতে এবং ৩৮২০০০ মানুষের পুঙ্গত্ব রোধে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জাতীয় সংসদের সংশোধন জরুরি।

বক্তারা বলেন বিশ্বে বিভিন্ন উন্নত দেশে জনগনকে সচেতন করতে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করা হলেও বাংলাদেশে এখনো লিখিত স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করা হচ্ছে। এ দেশের অধিকাংশ মানুষ নিরর হওয়ায় এদেশে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী খুবই জরুরি। যা আইন সংশোধনের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও করারোপের উদ্যোগ গ্রহণ করলেই তামাক কোম্পানিগুলো নানা প্রচারণার মাধ্যমে সরকারকে বিভ্রান্ত প্রচেষ্টা করে। কোম্পানিগুলোর এ ধরনের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হলে জনস্বাস্থ্য তিগ্রস্ত হবে। সংবিধানিক দায়িত্বকে সম্মুন্নত রাখে জনস্বাস্থ্য রায় তামাক কোম্পানির সকল প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করে আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির ল্েয দৃঢ় পদপে গ্রহণ জরুরি।

কর্মসূচীতে ৩০জন স্কেট সদস্য ছাড়াও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), মানবিক, এইড, একলাব, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, জাতীয় অধূমপায়ী ফোরাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব, ইপসা, স্বভূমি, টিডাব্লিউসি, নিরাপদ, উদ্যোগ, ইত্যাদি সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

১৯৯৯ সালে ৯ অক্টোবর ভয়েজ অব ডিসকভারী নাম তামাক কোম্পানির প্রচারণা কার্যক্রম প্রতিহত করতে গিয়ে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো সম্মিলিত উদ্যোগে জন্ম হয় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের। সংগঠনগুলোর সম্মিল্লিত প্রচেষ্টা দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট একটি নাম, যার সাথে জড়িয়ে আসছে ৭০০ বেশি সংগঠন। দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে ৯ অক্টোবরকে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ৯ অক্টোবর ২০১১ প্রথম এই দিবস পালণ করা হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিকে সামনে সারা দেশের প্রায় ৪০০-র বেশি সংগঠন এই দিবস পালন করছে।