করোনা প্রাদুর্ভাবে তামাক পণ্য উৎপাদন ও কোম্পানি বন্ধ রাখার দাবী

করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবী যখন অবরুদ্ধ তখন ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানির তামাকজাত পণ্য উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয় অব্যহত রাখার অনুমতি দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। যা অত্যন্ত দু:খজনক! অবিলম্বে আত্নঘাতি এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। ৭ এপ্রিল, ২০২০ জোট’র সমন্বয়কারী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবী জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছে, ধূমপায়ী ও তামাক সেবনকারীরা করোনা COVID-19 সংক্রমণের মারাত্নক ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপায়ীদের করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি! এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি। করোনা প্রতিরোধ করার জন্য ইমিউন সিস্টেম বা শরীরে রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরী। ধূমপান ও সকল প্রকার তামাক শরীরের বিশেষ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কওে শরীরের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা নষ্ট করে বিধায় এসকল পণ্য সেবন হতে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে সকলকে।

ইতোমধ্যে চীন, ইতালী, ফ্রান্সে COVID-19 সংক্রমণে মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ ধূমপায়ী ছিলো বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে। যা সারা বিশ্বের জন্য সতর্কবার্তা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, কারণ, বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি তামাক সেবনকারী দেশের মধ্যে অন্যতম।
 
করোনা প্রতিরোধে সরকার পুরো দেশে ‘লকডাইন’ ঘোষণা করেছে, প্রয়োজনে জরুরী অবস্থাও ঘোষণা করা হতে পারে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় স্তম্ভ গার্মেন্টস্ শিল্প বন্ধ হয়েছে। বলা যায়, দেশের পুরো উৎপাদন ব্যবস্থা স্থবীর। তামাক কোন খাদ্য দ্রব্য বা ঔষধী পণ্য নয়। তারপরেও দেশ ও বিশ্বের এমন ক্রান্তিলগ্নে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোর বিষ শলাকা উৎপাদন অব্যহত রাখার ক্ষেত্রে সরকারের একটি দায়িত্বশীল সংস্থা কর্তৃক এধরনের ‘অযৌক্তিক আবদার’ মেনে নেওয়া অত্যন্ত দু:খজনক! মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ক্ষতিকর পণ্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ বিধ্বংসী পণ্য উৎপাদনতারী তামাক কোম্পানিগুলোর মুনাফা অর্জনের পথ সুগম করে দেওয়া কাম্য নয়!
 
বাংলাদেশে ৩৫% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। বলাই বাহৃল্য যে, কয়েক কোটি মানুষ করোনা ভাইরাস সংক্রমনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তার উপর এমন আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত চলমান করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। এধরনের কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” প্রত্যয় বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সবিনয় অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।