তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়তে সারা দেশব্যাপী বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন

প্রতিবারের ন্যায় এ বছরেও সারা বিশ্বে উৎযাপিত হতে যাচ্ছে ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এ দিবসটি পালনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছর তামাক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে দিনটির ইংরেজি প্রতিপাদ্য নির্ধারন করা হয়েছে “Protect the environment। বাংলায় প্রতিপাদ্যটি নির্ধারন করা হয়েছে ”তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ”।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ২৩ মে ২০২২ থেকে ৭ ই জুন ২০২২ পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করেছে। উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, তামাক নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা মূলক আলোচনা সভা, এ্যাডভোকেসি মিটিং, প্রেস কনফারেন্স, জনসচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন, মতবিনিময় সভা, সোস্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, ব্যানার স্থাপন, নো-স্মোকিং সাইনেজ বিতরণ এবং ওয়েবিনার।

ইতিমধ্যেই তামাকের মরণ ফাঁদ থেকে কিশোর-তারুণদের বিরত রাখতে, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জনমত গঠন করার উদ্দেশ্যে গত ২৩ মে থেকে ২৫ মে যথাক্রমে ধানমন্ডি লেক, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) এবং দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ক্যাম্পাসে স্বাক্ষর ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে । এ ক্যাম্পেইন এ ৫ শতাধিক ছাত্র, শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ব্যক্তি স্বাক্ষর করে ।        

উল্লেখ্য, সড়ক দূর্ঘটনা, করোনা মহামারী বা যেকোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে প্রাণহাণির চাইতে তামাক ব্যবহার জনিত কারণে মৃত্যুহার বেশি। তামাক চাষের ক্ষেত্রে কৃষি জমিতে অত্যন্ত ক্ষতিকারক ক্লোরিন, বিভিন্ন রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার করার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস, পানি ধারণ ক্ষমতা নষ্ট এবং ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এসকল ক্ষতিকর রাসায়নিক নদী ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পানি দূষিত করছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরূপ। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য নির্বিচারে বনজ, ফলজ, ঔষধিসহ সব রকম গাছ কেটে চুল্লিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা আমাদের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও জলবায়ুর মারাত্বক পরিবর্তন করছে। ফলে জীবন জীবিকা ও আয়ের উৎসও সংকীর্ণ হচ্ছে।

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও স্বাস্থ্য অধিকার রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় বাস্তবায়নের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায় থেকে তরুণ প্রজন্মসহ দেশের আপামর জনসাধারণের স্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকের বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।