তামাকের জমিতে তুলা চাষ হলে আমদানি ব্যয় কমবে ছয় হাজার কোটি টাকা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর সমর্থন

তামাক জনস্বাস্থ্য, সামাজিক অবক্ষয়, অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে তামাক থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা, যেখানে একই অর্থ বছরে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ছিল ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। প্রতিবছর দেশের প্রায় ৯৯ হাজার ৬০০ একর জমিতে তামাক চাষ হয়। অথচ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ‘বস্ত্র’ থেকে সরকারের রপ্তানি আয় ৩১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও দেশের মাত্র ৮ হাজার ৪৩০ একর জমিতে তুলা চাষ হয়। যা থেকে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯৯০ বেল তুলা উৎপাদন হয়, যা মোট চাহিদার মাত্র ২%। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮৫ লক্ষ বেল তুলার প্রয়োজন যেখানে প্রায় ৮০ লক্ষ বেল তুলা আমদানি করতে হয়, যার আমদানি মূল্য ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তামাক চাষের জমিতে তুলা চাষ করা গেলে বর্তমান উৎপাদন থেকে প্রায় সাড়ে তেরো (১৩) গুণ বা মোট চাহিদার প্রায় ১৫% তুলা বেশি উৎপাদন করা সম্ভব। যা প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা আমদানি ব্যয় কমাতে সহায়তা করবে। তামাক চাষের জমিতে তুলা চাষ করা গেলে তা দেশ ও সরকারের জন্য লাভজনক এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালীকরণ ও তামাক চাষের জমিতে তুলা চাষ বৃদ্ধির সমর্থনে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীরপ্রতীক গোলাম দস্তগীর গাজী, এমপি মহোদয়ের সাথে আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (রবিবার) বাংলাদেশ সচিবালয়ে টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে তুলা চাষের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

এসময় মাননীয় মন্ত্রী বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তায় আইন শক্তিশালীকরণে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এ বিষয়ে আমার ও আমার মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে আমাদের মন্ত্রণালের সমর্থন সব সময় থাকবে। একইসাথে, তামাক চাষের জমিতে তুলা চাষের উদ্যোগের বিষয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, এতে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং দেশে তুলার ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে। আমরা কৃষি মন্ত্রণালয ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে এ বিষয়ে কাজ করবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রকল্প পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক মোঃ বজলুর রহমান, প্রোজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, টিসিআরসি’র প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ জুলহাস আহমেদ, বিভূতী ভূষণ মাহাতো, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ সামিউল হাসান সজীব।