তামাক নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক অঙ্গিকার জরুরী -অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা

রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জনগনের প্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধিদের কাছে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে জনগনের প্রত্যাশা অনেক। তামাক জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বিধায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তামাক সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তামাক নিয়ন্ত্রণে অঙ্গীকার ও সুস্পষ্ট লক্ষ্যমাত্রা রাখা, নির্বাচনে সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য ব্যবহার বর্জন, রাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রতীকের তালিকা থেকে ‘হুক্কা’ প্রতীক অপসারন ও ভোটকেন্দ্রগুলো ধূমপানমুক্ত নিশ্চিত করাসহ সর্বোপরি রাষ্ট্রের সকল নীতি তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরী। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তামাক নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকার চাই” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এই আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, এইড ফাউন্ডেশন এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য মো. নাজিমুদ্দিন, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আমির হাসান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার কাজী মো. হাসিবুল হক, সুখ সাথী’র নির্বাহী পরিচালক মো. তুহিন মাহমুদ, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতি’র নির্বাহী পরিচালক আতিকা হোসেন, বাঁচতে শিখ নারী’র নির্বাহী পরিচালক ফিরোজা বেগম, টিসিআরসি’র প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী মো. মাসুম হোসেন প্রমূখ। এছাড়াও বাংলাদেশ গার্ল গাইডস্ এসোসিয়েশন, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, ইন্সটিটিউট অব ওয়েলবিয়িংসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যে কোন কল্যাণকর রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। রাষ্ট্রীয় কল্যাণে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের আজ পর্যন্ত যে সকল অর্জন, তার অনেকাংশে সম্ভব হয়েছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে তামাকের ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখতে ও আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এই পণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অকাল মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমিয়ে আনার লক্ষমাত্রা থাকা প্রয়োজন।

বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৩০% এর অধিক জনগোষ্ঠী তরুণ। তামাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘণ করে এ সময়ে তাদের পণ্যের প্রচারণা জোরদার করার ফলে নিবার্চনকালীন সময়ে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। যার প্রভাব পড়ে তরুণ প্রজন্মের উপর। বিগত দিনেও তামাক কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধন, তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানসহ তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রণীত বিভিন্ন নীতি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছে। সামগ্রিক তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে তামাক কোম্পানির এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম।

দেশের জনগনের স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিধায় তামাক নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরী। বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মর সুস্থ্যতা নিশ্চিতে দেশের নীতি নির্ধারক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে তামাক নিয়ন্ত্রণে স্বতস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে।