তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ই-কোর্টে হাজারোর্ধ্ব অভিযোগ

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর বাস্তবায়নে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ই-কোর্টে (http://ecourt.gov.bd/) অভিযোগ দায়ের ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে দেশব্যাপী ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র সহায়তায় জোটের স্থানীয় সদস্য সংগঠনসমূহের উদ্যোগে দেশের ৪২টি জেলায় অসংখ্য সংগঠন উক্ত কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে।

জোটের সচিবালয়ে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, আগষ্ট – ডিসেম্বর, ২০২০ সময়কালে তামাক নিয়ন্ত্রন আইন লঙ্ঘণের চিত্র তুলে ধরে ই-কোর্ট এ ইতোমধ্যে ১১০০ (এক হাজার একশত) এর অধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংগঠনসমূহের পক্ষ্যে এসকল অভিযোগের প্রদত্ত নম্বর সংরক্ষণ করে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিভিল সার্জনের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি প্রেরণের মাধ্যমে অবহিতকরণ ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনা, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুর, শেরপুর, সাতক্ষীরা, মাদারিপুরসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযোগের সূত্র ধরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম গতিশীল করতে জোটভুক্ত সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন থেকে আইন লঙ্ঘণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে তথ্য সংগ্রহ ও প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে আসছে। প্রযুক্তিগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে ই-কোর্টে অভিযোগ দাখিল তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের একটি সুযোগ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জনকল্যাণে প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম গতিশীলতা পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও তামাকের সকল ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে ২০৪০ সালের মধ্যে সরকার দেশকে তামাকমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা ধরণের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক হলেও বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে তামাক কোম্পানিগুলো। বিশেষত: আইন লঙ্ঘণ করে তামাক পণ্যের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশকে তামাকমুক্ত করতে আইনের বাস্তবায়ন জরুরি।

উল্লেখ্য, তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে করোন আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশী (বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা)। এতদস্বত্ত্বেও, বিভিন্ন কৌশলে তামাক কোম্পানিগুলো ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন লঙ্ঘণ করে তামাক পণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

এমতাবস্থায়, তামাক বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠনসমূহের মাধ্যমে এ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্মিলিতভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য জোটের সচিবালয়ের পক্ষে সারাদেশে সহযোগী সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারিগরী প্রশিক্ষণ ও গাইড লাইন প্রদান করা হয়।