তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মূল বাধা কোম্পানি

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বড় বাধা হচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। এ কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসার স্বার্থে তরুণদের ধূমপানে আকৃষ্ট করে যাচ্ছে। তরুণরা ধূমপানে আসক্ত হলে দেশের জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করবে। সিগারেট কোম্পানগিুলো মথ্যিা তথ্য প্রচার করে সামগ্রকি তামাক নয়িন্ত্রণ র্কাযক্রমকে বাধাগ্রস্থ করার চষ্টো চালাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহকে গুরুত্ব দিয়ে আজ ২৪ মে ২০২৩, বিকাল ০৩:০০ টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে হেলথ ইকোনোমিক ইউনিটির সভাকক্ষে ‘‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’’- শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়করী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার। সভায় সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে ৯ টি ভিন্ন মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপনায় দ্যা ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী দেশে বাৎসরিক খাদ্য ও মসলা আমদানিতে ব্যয় হয় প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। দেশের তামাক চাষের জমিগুলোতে আমদানি নির্ভর পণ্য চাষ করলে খাদ্যের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি দেশে আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে। আর এ সমস্যা সমাধানে তামাক চাষ হ্রাসের লক্ষ্যে দ্রুত “তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি” চূড়ান্ত করা জরুরি।

সভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি কোম্পানি সিগারেটের বিকল্প এবং কম ক্ষতিকর পণ্য হিসাবে ভেপিং/ই-সিগারেট প্রসারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ গোপনে কোম্পানিগুলো ভেপিং মেলার মাধ্যমে তরুণদের এ সকল পণ্য তরুণদের আকৃষ্ট করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করবে। বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলোর অর্থায়নে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্মিত হচ্ছে, যা তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করছে। ধূমপানের পাশাপাশি এসকল স্থানে নানা নিষিদ্ধ মাদক ব্যবহারেরও প্রমান মিলেছে।

বক্তারা আরও বলেন সিগারেটের মোড়কে উল্লেখিত মূল্যের থেকে স্থানভেদে ১০-৩৫ টাকা অধিক মূল্যে বিক্রি হওয়ায় সরকার বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাক্ ারাজস্ব হারাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং রাজস্ব বৃদ্ধিতে তামাক কোম্পানিগুলোর এ ধরনের বেআইনী কাজের বিরুদ্ধে শাস্তিুমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা করার পাশাপাশি এই কার্যক্রমে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহন করা জরুরী। সভায় বক্তারা দ্রুত “তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি চূড়ান্ত করার আহবান জানায়।

পরিশেষে বক্তারা তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় খুচরা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ, মোড়কে উল্লেখিত মূল্যে বিক্রয় নিশ্চিত করা, ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্মানের বিধান বাতিলকরণ, ই-সিগারেট নিষদ্ধকরণ, সকল তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী যুক্তকরণ, এবং বিক্রেতাদের জন্য লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক এবং একক শলাকার সিগারেট বিক্রয় বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া, দেশব্যাপী সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করতে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত সংগঠনগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যম এই কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্তকরণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।