বিইউএইচএস প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় তামাক কোম্পানিকে সহযোগীতা না করার নীতি গ্রহণ করেছে

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় বাস্তবায়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিগুলোকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরি। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথ-বিইউএইচএস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশান অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩ অনুযায়ী তামাক কোম্পানিকে সহযোগীতা না করার নীতি গ্রহণ করেছে। যা অদ্য ০৭ জুন ২০২৩ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

গত ৭ জুন ২০২৩ সকাল ১১টায় ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথ-বিইউএইচএস, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতিগুলো সুরক্ষায় গাইডলাইন গ্রহণ” বিষয়ক একটি সভায় এফটিসি-৫.৩ আর্টিকেলকে সমর্থন জানিয়ে “কোড অব কনডাক্ট” সাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সেস (বিইউএইচএস) এর এ ধরনের উদ্যোগ দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল । উক্ত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন।

বিইউএইচএস, পাবলিক হেলথ অনুষদের ডীন প্রফেসর ডা. আনোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বিইউএইচএস এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, দ্য ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং এফটিসি-৫.৩ আর্টিকেলকে সমর্থন জানিয়ে “কোড অব কনডাক্ট” গ্রহণ করেছে। বিইউএইচএস এর সহযোগী অধ্যাপক পলাশ বণিক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব। মূল প্রবন্ধে, কোম্পানিগুলো জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি প্রনয়নে কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং উত্তরনে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সেস (বিইউএইচএস) এর রয়েছে শক্তিশালী অবস্থান। তিনি তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারের পাশাপাশি সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানকে “কোড অব কনডাক্ট” গ্রহণে গ্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান। তিনি অনতিবিলম্বে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করার চেস্টা করছে। তামাক কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন করা জরুরি। তামাক কোম্পানির সাথে কোন প্রকার আলোচনা, স্পন্সরশীপ নেয়া, যৌথভাবে কোন প্রোগ্রামের আয়োজন এমনকি কোন প্রোমোশনাল কার্যক্রমে সহায়তা না করে নীতি সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এফসিটিসি এর ৫.৩ অনুসারে বাংলাদশে ইউনভার্সিটি অব হেলথ সায়ন্সেস (বিইউএইচএস) নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে:

· তামাক কোম্পানির সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির নামে প্রচারণা বন্ধ

· সর্বস্তরের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রকাশনা সরবরাহ

· কোন অনুষ্ঠানে ও কমিটিতে তামাক কোম্পানি/কোম্পানির প্রতিনিধি বা তামাক কোম্পানির স্বার্থে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ না জানানো

· প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানি বা কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা গ্রহণ, প্রদান ও অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবে

· সকল কার্যালয়ে সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকবে

· অন্যান্য সংস্থাসমূহকে এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে উদ্ধুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে।

· তামাক কোম্পানির স্বার্থে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সুবিধা পেয়েছেন, এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেবে না।