জনস্বাস্থ্য বিবেচেনায় তামাক কোম্পানরি হস্তক্ষপে বন্ধ করা জরুরী
সাংবিধানিকভাবে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে সরকার সর্বদা বদ্ধপরিকর। ‘তামাক’ জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর পণ্য, এটি সর্বজনস্বীকৃত। গবেষণায় দেখা যায়, সিগারেটে ৭০০০ এর অধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যা ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদীু রোগ যেমন: হাঁপানি, এ্যাজমা, সিওপিডিসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের জন্য সরাসরি দায়ী। এছাড়া বিড়ি, হুক্কা এবং ধোঁয়াবিহীন বিভিন্ন তামাকজাত দ্রব্য সমানভাবে জনস্বাস্থ্যের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে। সরাসরি তামাক আসক্তির কারণে পৃথিবীতে বছরে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। পাশাপাশি পরোক্ষ ধূমপানের ফলে ১২ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। এসব অকালমৃত্যুর প্রায় ৮০ শতাংশ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঘটছে। এর অন্যতম কারণ, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তামাক কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ। Tobacco Atlas-২০১৮ অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬১…
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা
ভূমিকা: এ উপমহাদেশে পানের ব্যবহার অনেক প্রাচীন, প্রখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা তার ভ্রমন কাহিনীতে পান ও সাথে নানা উপকরণ দিয়ে অপ্যায়নের কথা বর্ণনা করেছেন, তবে এ সকল উপকরনে মধ্যে তামাক ব্যবহার ছিল না। ভারতীয় উপমহাদেশে পূর্তগীজরা ১৬০৫ সালে তামাক চাষ শুরু করে । মাত্র কয়েক শতকের মধ্যে এ ক্ষতিকর দ্রব্য ব্যবসার পিছনে থাকা মানুষগুলো শুধু এ ব্যবসার প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে, মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি আইন কানুনের মাঝে সুবিধা নিশ্চিত করে নেয়। তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা শুরু হয় তার অনেক পরে। এ সময়ের মধ্যে তামাক ব্যবহার ব্যাপকভাবে দেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। বিগত কয়েক দশকে তামাকের ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, পরিবেশের উপর ক্ষতিগুলোর বিষয়ে ব্যাপক গবেষণালব্ধ তথ্য প্রমান প্রকাশ হওয়ায় বাংলাদেশেও তামাক নিয়ন্ত্রণে নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ কিছুটা জোরদার…
তামাক নিয়ন্ত্রণে ‘কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ সময়ের বড় প্রতিবন্ধকতা
সৈয়দা অনন্যা রহমান | বর্তমানে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে অনেক অগ্রগতি দেখানো হলেও ২০১৭ সালের গ্যাটস এর ডাটা অনুসারে তামাক ব্যবহারকারীর হার ৩৫.৩%। ২০১৮ সালে তামাকজনিত রোগে অকাল মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার জনের। বাংলাদেশ প্রতিবছর তামাকজনিত রোগ ও অকাল মৃত্যুর কারণে ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা বা ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমান অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ১৯৮৮ সাল হতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস সারা পৃথিবীতে পালিত হয়ে আসছে। আর্ন্তজাতিকভাবে পালিত হলেও বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয়ভাবে কোন নিদিষ্ট দিবস পালন করা হয় না। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদার সাথে ৯ অক্টোবর জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস পালন করে আসছে। এবছর জাতীয় তামাকমুক্ত দিবসের…
তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাজেট বরাদ্দ এবং কার্যকর ব্যয় জরুরি
‘ধূমপানে বিষপান’, ‘তামাক মৃত্যু ঘটায়’- বছরের পর বছর এসব সতর্কবাণী প্রচলিত থাকলেও জনসাধারণে এগুলোর প্রভাব কতটা তা দেশের তামাক ব্যবহারকারী ও তামাকজনিত রোগে মৃত্যুর সংখ্যার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। জনসংখ্যার আধিক্য, নিম্নআয়, দারিদ্র্যতা, অসচেতনতা এবং নানাাবিধ কারণে বিশ্বের সর্বোচ্চ তামাকজাত পণ্য ব্যবহারকারি দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সম্প্রতি প্রাপ্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ জন মানুষ মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল এ্যাডাল্ট ট্যোবাকো র্সাভে (গেটস) ২০১৭ অনুসারে, দেশের ১৫ বছরের উর্ধ্বে মোট জনসংখ্যার ৩৫.৩% অর্থাৎ ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাকজাত পণ্য সেবন করে। পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয় আরো ৪ কোটি ৮ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে FCTC (Framework Convention on Tobacco Control) আন্তর্জাতিক এই কনভেনশনে ২০০৩…
রাজস্ব আদায় ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নে তামাক পণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং
  পটভূমি: তামাকের কারণে জনস্বাস্থ্য ও সামগ্রীক উন্নয়ন হুমকির মুখে পড়ছে। ২০১৮ সালে তামাক সেবনের কারণে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে। তামাক ব্যবহারে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশে প্রতিবছর ব্যয় হয় ৩০৫৭০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯% তরুন, যারা তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট। তামাক কোম্পানির নিজ ব্যবসা প্রসারে তামাক পণ্য বিপণনে কূট-কৌশল প্রয়োগের মাধ্যেমে সামগ্রীক উন্নয়নে বাঁধার সৃষ্টির বিষয়টি সম্পর্কে ভাববার এখনই সময়। বর্তমান সময়ে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, কর বৃদ্ধি ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর সঠিক বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত ৩টি ধাপে তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নের উপর কমপ্লায়েন্স মনিটরিং পরিচালনা করে এবং তামাক পণ্যের আদর্শ মোড়কের প্রয়োজনীয়তা তুলে…
তামাক কোম্পানীর লাভের বাজেট: উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য
গত ১১ জুন জাতীয় সংসদে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ২০২০-২১ অর্থ-বছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন। প্রতি বছরের মত এবারো বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ ও করারোপের প্রস্তাব করেছেন মাননীয় মন্ত্রী। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য হিসাবে ‘তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমানো এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধি’ বলে তিনি তাঁর বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ ও এর ওপর করারোপ পর্যালোচনা করলে অতি সহজেই অনুমান করা যায়, প্রস্তাবিত এই মূল্য ও কর দিয়ে এই এই লক্ষের একটিও অর্জন সমম্ভব নয়। বরং এই প্রস্তাবের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী আরো একটি ‘তামাক কোস্পানীর লাভের বাজেট প্রস্তাব’ হাজির করেছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে বিশ্বের যেসব দেশে তামাকজাত দ্রব্য সস্তা, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর বাজেটে এসব দ্রব্যের দাম বাড়ানো হলেও পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এই বৃদ্ধি তামাক…
তামাকের রাজস্ব মিথ ও কোম্পানীর কূটকৌশল
পৃথিবীর উন্নত, অনুন্নত, উন্নয়নশীল কম বেশি সব দেশে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সিগারেটসহ তামাক পণ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে প্রতিবেশী ভারত-নেপালসহ অনেকগুলো দেশ সিগারেটের প্যাকেটের উপরের অংশের বেশিরভাগটা জুড়ে ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর ব্যবহার, ই-সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সঠিক পদ্ধতিতে কর আরোপ করলে সিগারেটের দাম যেমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের রাজস্ব বাড়ে- তেমনি অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির তুলনায় সিগারেটের দামটা বেড়ে যাওয়ায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে ধূমপায়ীর সংখ্যা। হাইপোথিসিস নয়, কর বাড়িয়ে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে ধূমপায়ীর হার কমানোর বিষয়টি বাস্তবে করে দেখিয়েছে ফিলিপাইন, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আরও অনেক দেশ। বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ সিগারেটের বাজার বাংলাদেশ কি করছে? জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সিগারেটসহ তামাক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে কী কর বাড়ছে যথাযথভাবে? কর বৃদ্ধির কথা এলেইতো সিগারেট কোম্পানী নানা কৌশলে প্রচার চালিয়ে থাকে বাংলাদেশে একক…
তামাক পণ্যের ওপর করারোপ যেমন হওয়া উচিত
বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুসারে, দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের এক-তৃতীয়াংশ তামাক ব্যবহার করে। তামাক জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় কিছু তো নয়ই, বরং এর বহুল ব্যবহার জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি-উভয়ের জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে দেশে তামাকজনিত রোগের কারণে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, যা ওই বছরের মোট মৃত্যুর ১৩.৫ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র প্রায় ১.৪ শতাংশ ছিল। তামাক চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, তামাক পণ্য উৎপাদন, কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস, বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ার পরিবেশগত ক্ষতি ইত্যাদি হিসাব করা হলে এই ক্ষতি আরও বহুগুণ হবে। তামাক খাতে ব্যয় হওয়া পুরো টাকাই অপচয়…
তামাকের এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায়
অনেকটা এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করার মতো। সরকার চাইলেই করানোয় আক্রান্ত স্বাস্থ্য খাত ও অর্থ খাত দুটোকেই একসঙ্গে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন বাজেটে কেবল তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়েই অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জন এবং তামাক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্যব্যয় কমানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাকাসক্তরা করোনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাকের ক্ষতির শিকার এই বিপুল প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তামাকের সহজলভ্যতা এবং ত্রুটিপূর্ণ করকাঠামোই এর প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসসহ ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মিলিত গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০২০-২১ অর্থবছরের…
তামাকের উপর কর কমানোর সুপারিশ লাভবান করে তামাক কোম্পানীকে
২০১৮ সালে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে ১,২৬,০০০ জন মারা যায়। বাংলাদেশে প্রায় ৩৫% প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। সম্প্রতি গবেষনায় প্রমাণিত তামাক ব্যবহারের কারণে ধূমপায়ীদের কোভিড ১৯ এর ঝুঁকি ১৪ গুন বেড়ে যায়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, অথচ একইসময়ে (২০১৭-১৮) তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ মাত্র ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। একটি বড় তামাক কোম্পানীর ওয়েব সাইটে উল্লেখ রয়েছে, তারা সিগারেট শিল্পর মাধ্যমে দেশের রাজস্ব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ও প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ রাজস্ব প্রদান করছে। (BAT Bangladesh, 2019) । রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজস্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সন্দেহ নেই। তবে রাজস্বটা কোন খাত থেকে আসছে এবং এ পরিমান রাজস্ব দিয়ে তারা রাস্ট্রের…
তামাক ও নিকোটিন থেকে তরুণদের বাঁচাতে হবে
প্রারম্ভিক: ৩১মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। ১৯৮৭ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলোর উদ্যোগে বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও ১৯৮৮ সাল থেকে সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “Protecting youth from industry manipulation and preventing them from tobacco and nicotine use” যার বাংলা ভাবানুবাদ “তামাক কোম্পানির কূটচাল রুখে দাও - তামাক ও নিকোটিন থেকে তরুণদের বাঁচাও” নির্ধারণ করার মাধ্যমে দিবস প্রতিপালন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট] সহ তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।   তামাক জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর, একথা সর্বজনস্বীকৃত। সব ধরনের তামাকই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা যায়, সিগারেটে ৭০০০ এর বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে। যা ক্যান্সার,…
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক প্রভাব
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি ‘দ্য ইকোনমিক কস্ট অফ টোবাকো ইউজ ইন বাংলাদেশঃ আ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক গবেষণার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পুরো রিপোর্টটি পাওয়া যাবে এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পরিচালিত জাতীয় পর্যায়ের এই গবেষনাটিতে ‘আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি’র ‘গ্লোবাল ক্যান্সার কন্ট্রোল ও ইকোনমিক অ্যান্ড হেলথ পলিসি রিসার্চ ইউনিট’ এবং ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে। এই গবেষনায় পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, তামাক ব্যবহারের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার লোকের মৃত্যু ঘটেছে, যা সে বছরের মোট মৃত্যুর ১৩.৫ শতাংশ। একই বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে ভুগছিলেন এবং প্রায় ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যখাতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ…
ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে মুজিববর্ষে সকল প্রকার তামাকের কর বৃদ্ধি জরুরি
এস এম নাজের হোসাইন ॥ 'এমনিতেই বড় আঁধার এখানে/এমনিতেই বড় ধুঁকে ধুঁকে বাঁচি/ধোঁয়ায় ভিষণ চোখ জ্বালা করে/ফুসফুসে বিষ ঢেলোনা।' কথাগুলো ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানের 'নিকোটিন' গানের। পৃথিবীর কম ধূমপায়ী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঘানা, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং পানামা। এসব দেশে ধূমপান ও তামাকপণ্য ব্যবহারের প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার কারণগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ধূমপান ও তামাকপণ্য রোধে এইসব দেশের সরকারের কঠোর ও কার্যকর ভূমিকা পালন। উচ্চহারে কর আরোপ যার অন্যতম কারণ। এসব দেশে যারা ধূমপান করে তাদের অত্যন্ত উচ্চদাম দিয়ে সিগারেট কিংবা তামাকপণ্য সংগ্রহ করতে হয়। ধূমপানে আসক্তি তৈরির আগেই উচ্চদামের কারণে অধিকাংশ মানুষই ধূমপানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। মানুষের অনাগ্রহের কারণে তামাকজাত কোম্পানিগুলো গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে নিজেদের ব্যবসা। ফ্রান্সও ধূমপান রোধে দ্রুত অগ্রগতি লাভ করছে। এখানেও লক্ষ্য…
করোনার ঝুঁকি মোকাবেলায় তামাক কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করা জরুরি
মো. আবু রায়হান ॥ তামাক একটি মারাত্মক ক্ষতিকর নেশাদ্রব্য। বিশেষ করে, ধূমপান করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে তোলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে, ধূমপায়ী/তামাক সেবনকারীরা নানারকম স্বাস্থ্য সমস্যাসহ জটিল ও কঠিন রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে বিধায় COVID-19 বা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির ঝুঁকিতে শীর্ষে অবস্থান করছে।   কারণ হিসেবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সিগারেট সেবনের হাতের আঙুলগুলো ঠোঁটের সংস্পর্শে আসে এবং এর ফলে হাতে (বা সিগারেটের ফিল্টারে) লগে থাকা ভাইরাস মুখে চলে যাবার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এছাড়া ধূমপায়ীদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যায় ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি - যা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তদুপরি, ধূমপান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস পায় বিধায়, সহজেই ক্ষতিকর ভাইরাস…
তামাক চাষের লাভ-ক্ষতি ‍বিশ্লেষণ
ইব্রাহীম খলিল ॥ পর্তুগিজদের হাত ধরে ১৫০৮ সালের দিকে এ উপমহাদেশে তামাক আসার পর আজ অবধি এর চাষ চলছেই। একইসঙ্গে এর ব্যবসা সম্প্রসারণে তামাক কোম্পানি সব কালেই সরকারের সহায়তা পেয়েছে । ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নানা সময়ে তামাকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেও ঠিক কাক্সিক্ষত সুফল পাওয়া সম্ভব হয়নি। অথচ তামাকজনিত রোগের কারণে দেশে মৃত্যুর সারি দীর্ঘ থেকে আরো দীর্ঘতর হচ্ছে। একইসঙ্গে সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বিশে^র বিভিন্ন দেশে তামাক চাষ সীমিত হয়ে আসলেও বাংলাদেশে ক্রমেই তা বেড়ে চলেছে। ফলে কৃষক থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পুরো দেশ। গবেষণায় দেখা গেছে, তামাকের কাঁচা পাতার সংস্পর্শে থাকা, জমিতে প্রচুর কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করার কারণে কৃষকরা নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এ থেকে…
কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে এফসিটিসি’র অনুচ্ছেদ ৫.৩ চর্চ্চার প্রয়োজনীয়তা
আমিন-উল-আহসান । আমাদের আত্নতৃপ্তির জায়গা এই যে, আমরা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি সবার আগে সমর্থন করেছি। দ্রুততম সময়ে এফসিটিসি অনুস্বাক্ষর করেছি এবং সেই আলোকে আমরা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করেছি। আমাদের সন্তুষ্টির জায়গা এটা যে, আমরা আইনের অধিকতর বাস্তবায়নের জন্য ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধন করেছি। আইন বাস্তবায়নের জন্য বিধিমালাও প্রণয়ন করেছি। তামাকজাত পণ্যের মোড়ক এবং এর ৫০ শতাংশ জায়গা জুড়ে ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মূদ্রণ করা হয়েছে। তামাকজাত দ্রব্যে ১% হারে সারচার্জ আরোপ এবং স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি পাশ করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারের সপ্ত-পঞ্চবাষিকী কর্মপরিকল্পনা এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাল্টিসেক্টোরাল এ্যাকশন প্ল্যানে তামাক নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন সে…
তামাক নিয়ন্ত্রণে কোম্পানীর প্রভাব বন্ধ করা হোক
টেকসই উন্নয়নে তামাকের মতো স্বাস্থ্যহানীকর পণ্য নিয়ন্ত্রণ জরুরী। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার জন (বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, ২০১৮)। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশ ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও তামাক ক্ষতিকর। তামাকের ভয়াবহতা তথা সার্বিক দিক বিবেচনায় আর্ন্তজাতিকভাবে সারাবিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। বাংলাদেশেও জনস্বাস্থ্যের ওপর তামাকের এই ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে সরকার অনেক দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও তামাক-কর কাঠামো শক্তিশালি করতে কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে কাংখিত লক্ষ্য অর্জনের রোডম্যাপ প্রস্তত করছে সরকার। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় তামাক কোম্পানীগুলো দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও আইন বাস্তবায়ন…
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তামাকে উচ্চহারে করারোপের আবশ্যকতা
জনস্বাস্থ্যের উপর তামাকের ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সমগ্র বিশ্ব অবহিত এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করার জন্য বিশ্ববাসী সচেষ্ট। এতদসত্ত্বেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মোতাবেক সমগ্র বিশ্বে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের প্রত্যক্ষ প্রভাবে বছরে ৫৪ লক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাবে ৬ লক্ষ ৬০ লক্ষ মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। এক্ষেত্রে তুলনামূলক বিচারে বাংলদেশের অবস্থা খুবই নাজুক। বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবনের প্রভাব কতটা ভয়াবহ দুইটি পরিসংখ্যান থেকেই তা সুষ্পষ্ট। এদেশে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবনের কারণে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬২ হাজারেরও বেশী মানুষ মারা যাবার পাশাপাশি ১২ লক্ষ মানুষ ক্যান্সার, যক্ষা, ডায়াবেটিস, হাঁপানি ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। দুর্ভাগ্যজনক সত্য এই যে, বাংলাদেশে তামাক অর্থকরি ফসল হিসেবে বিবেচিত। এনবিআর এর হিসাব মোতাবেক সিগারেট ও অন্যান্য তামাক জাতীয় পণ্য…
“তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” লক্ষমাত্রা অর্জনে সুপারিশ
বাংলাদেশকে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি পদক্ষেপ। তবে একাজ নিসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং এবং পরিকল্পিত সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ১৩ লক্ষ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। তামাকমুক্ত দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আগামী ২০৪১ সালের মাঝে তামাকের ব্যবহার ০৫% এ নিয়ে আসতে হবে। তামাকমুক্ত লক্ষমাত্রা অর্জনের আগে বাংলাদেশেকে আরো দুটি আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। ২০২৫ সালে মাঝে অসংক্রামক রোগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২৫% এবং সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট গোল (এসডিজি)-র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৩০% তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে কিছু প্রসঙ্গ প্রথমেই তুলে ধরা প্রয়োজন। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে অনেক অগ্রগতি সাধিত হলেও, অসংক্রামকরোগজনিত (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিস) মৃত্যু আমাদের জন্য…
তামাক কোম্পানির প্রতারণামূলক কর্মসূচি বন্ধ হোক
তামাক জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর, একথা সর্বজনস্বীকৃত। তামাক আসক্তির কারণে বছরে পৃথিবীতে ৮০ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়, এসব অকালমৃত্যুর ৮০ভাগ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশে ঘটছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের কঠোরতার ফলে চতুর তামাক কোম্পানিগুলো ঐ সকল দেশ হতে তামাক ব্যাবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এজন্য প্রাণঘাতী এ পণ্যের ব্যবসা প্রসারে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতারণামূলক কর্মসূচি সম্প্রসারিত হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষ তামাক ব্যবহারকারী ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম। এবং বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি বিবেচনায় সরকার দেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন পাস ও সংশোধন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে…
তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের ৯০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের প্রয়োজনীয়তা
ফারহানা জামান লিজা। প্রারম্ভিক: বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বদ্ধপরিকর। ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন’ শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকার’স সামিট এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জনে সরকার ও তামাক বিরোধী সংগঠন গুলো তামাক নিয়ন্ত্রনে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। তামাক ব্যবহারের ফলে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। তামাক ব্যবহারের ক্ষতি এতটাই মারাত্মক যে, তা গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তামাকজনিত ব্যাধি ও অকাল মৃত্যুর কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছর ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা বা ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ১.৪ শতাংশ। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায়…
বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে বড় প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপ
তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিসমুহের সুরক্ষায় ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিকেল ৫.৩ একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এই আর্টিকেলে বিশ্ব জুড়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রণীত নীতিসমুহ সুরক্ষা এবং তামাক কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপ প্রতিহতকরনে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা পালনের চেষ্টা করলেও তামাক কোম্পানিগুলোর প্রতিবন্ধকতামূলক কার্যক্রমগুলোর ফলে অগ্রগতি ব্যহত হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত সকল নীতি তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা শুধু সরকার নয় প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরও দায়িত্ব ও কর্তব্য। অথচ এবিষয়ে এখনো তামাক নিয়ন্ত্রণে সেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। আর্টিকেল ৫.৩ তে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এ আর্টিকেলে উল্লেখ করা হয়েছে “তামাক নিয়ন্ত্রণ স¤পর্কিত জনস্বাস্থ্য…
তামাক নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার অনুযায়ী কাজ করছে না কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যে কারণে তামাক চাষ বাড়ছে -আবু নাসের খান 
তামাক নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার অনুযায়ী কাজ করছে না কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যে কারণে তামাক চাষ বাড়ছে- জোট’র সাথে একান্ত স্বাক্ষাৎকারে পরিবেশবিদ আবু নাসের খান আমি মূলত পরিবেশ সংগঠক। পরিবেশের ক্ষতি করে এমন সব বিষয়ই আমার কাজের আওতায় পড়ে। তামাক চাষ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান করলে সেখানকার বাতাস দূষিত হয়। বাতাসও পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুতরাং, তামাক নিয়ন্ত্রণও আমার কাজের আওতায় পড়ে। ৯০ দশকের দেশে পরিবেশ রক্ষায় সামাজিক আন্দোলনে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করেছি। ৯৭ সালে পরিবেশ রক্ষার শপথ (পরশ) প্রতিষ্ঠা করি, ২০০০ সালে এর নাম হয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত বাপা’র প্রথম সভাপতি ছিলেন ও প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে আমি ছিলাম সাধারণ সম্পাদক। আমরা বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের কর্মসূচিগুলোতে…
তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য মনিটরিং বৈজ্ঞানিকভাবে ও সরকারের উদ্যোগে নিয়মিতভাবে করা দরকার -সাক্ষাৎকারে ডা. মোস্তফা জামান
প্রশ্ন: তামাক নিয়ন্ত্রণে আপনার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে কিছু বলুন? ডা. মোস্তফা জামান: আমি যেহেতু হৃদরোগ প্রতিরোধে কাজ করে আসছি, তখন থেকেই তামাক নিয়ন্ত্রণেও কাজ করছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ২০০৩ সালে যোগ দেয়ার পর জাতীয় পর্যায়ে কাজ শুরু করি। সে অর্থে আমি ২০০৩ সন থেকে জোরালোভাবে কাজ করছি। প্রশ্ন: গত ১৪ বছর সময়কালে কোন কোন পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে? ডা. মোস্তফা জামান: ২০০৩ সন বা কাছাকাছি সময়ে যখন বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন হতো, অনেকে বিষয়টাকে হালকাভাবে নিতেন। এর আগে আধূনিক কাজ করলেও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ জনপ্রিয় ছিল না। সে সময়ে টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সিগারেটের বিজ্ঞাপন চলত। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কোন লক্ষনীয় ভূমিকা ছিল না। তখন উপলব্ধি করি; নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ…
খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ দুষণ রোধে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ
অধিক জনসংখ্যার সীমিত ভুখন্ডের এ দেশ। খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক চাষ অগ্রাসীভাবে বিভিন্ন খাদ্য ভান্ডারের জমি দখল করে নিচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের খাদ্যভান্ডার বলে পরিচিত চলনবিল এখন দখল করে নিচ্ছে তামাক চাষ, পাবর্ত্য এলাকায় এ বিষের ছোয়া রন্ধে রন্ধে। তামাক চাষ শুধুমাত্র খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, এই বিষবৃক্ষ চাষ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বিপনন সকল ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত করছে জনসাধারণকে। তামাক পাতা উঠানোর মৌসুমে বাড়ীর নারী, পুরুষ শিশু সকলে একসাথে মাঠে কাজ করতে হয়। এসময় শিশুরা স্কুল কামাই করে তাদের অবিভাবকদের সাথে মাঠে কাজ করে। ফলে তামাক চাষীদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এভাবে তাদের শিক্ষাজীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় তারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ রাসায়নিক ও কীটনাশক মাটির…
জনস্বাস্থ্য রক্ষা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা
তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকজনিত রোগ হতে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ, শতভাগ ধূমপানমুক্ত পাবলিক প্লেস ও পরিবহন, প্যাকেটের গায়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী নিশ্চিত, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ, তামাক ত্যাগে সহযোগিতা প্রদান এবং তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি করার জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বাংলাদেশ অবস্থান ও কার্যক্রম নিয়ে অনেক মতামত রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আংশিকভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে মূল্যায়ন বা পর্যবেক্ষনের কারণে দেশের সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিত সম্পর্কে কেউ কেউ নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। দেশের সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম মূল্যায়ণ করলে তামাক নিয়ন্ত্রণে দেশের ব্যাপক অগ্রগতি পরিলক্ষিত হবে। একটি বিষয় আমাদের পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণ একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তামাক নিয়ন্ত্রণ একদিনে বা কয়েক বছরের তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করার সম্ভব…
নারীদের রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে সীমাবদ্ধতা
তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আলোচনায় আমাদের দেশে নারী ও শিশুদের উপর তামাকের ক্ষতির বিষয়টি সবসময় অবহেলিত রয়ে যায়। আমাদের দেশের নারীরা তামাকজাত পণ্য যেমন- জর্দ্দা, গুল, সাদাপাতা ইত্যাদি ব্যবহার করে আসলেও ইদানিং সিগারেট কোম্পানির প্রচারণার কারণে নারীদের মাঝে সিগারেটের ব্যবহারও বাড়ছে। ITC (The International Tobacco Control Policy Evolution Project) 2010২০১০ এর তথ্য অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে নারী তামাক সেবী বেড়েছে ২৪.৪% থেকে ৩২.০% এবং নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়েছে ১.৩ %। Global Adult Tobacco Survey -2009 এর তথ্য অনুসারে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্ক^ তামাক ব্যবহারকারী প্রায় ৪ কোটির বেশি। এর মধ্যে তামাক ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা ২৯% এবং সিগারেটের মাধ্যমে ধূমপায়ী নারীর সংখ্যা ১.৫% এবং বিড়ির মাধ্যমে ধূমপায়ীর সংখ্যা ১.১%। এছাড়া কর্মস্থল, পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ১…
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এর মাঝেও পুলিশ বাহিনীর অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশ ইতোপূর্বে অনেক ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। গত ১৪ এপ্রিল ২০১১ অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জনস্বার্থে নববর্ষের জনসমাগমস্থলকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগ দেশের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপের পর দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলাও নববর্ষের মেলা/ অনুষ্ঠান ধূমপানমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আজকে রমনা মডেল থানা ধূমপানমুক্ত করনের মাধ্যমে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি তা দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় ও দৃষ্টান্ত হবে। ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ: ১. ৩১ মে ২০১০ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ…